logo জেলা পরিষদ, কুমিল্লা

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর
খবর:

জেলা পরিচিতি

ভৌগলিক পরিচিতি

অবস্থান ও মৃত্তিকার গঠনঃ

কুমিল্লা জেলা ২৩°০১’ থেকে ২৩°৪৭’ ৩৬” উত্তর অক্ষাংশে এবং ৯০°৩৯’ থেকে ৯১°২২’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে বিস্তৃত। কর্কটক্রান্তি রেখা কুমিল্লা জেলা অতিক্রম করেছে। এই জেলার কিছু অংশ গঠিত হয়েছে প্লাবন ভূমি দ্বারা এবং কিছু অংশ পাহাড়ি বৈশিষ্ট্যময়। বাকি অংশ সমতলভূমি।

এ জেলার প্রাচীনতম শিলাভূমি লালমাই পাহাড়ের গভীরে মায়োসীন যুগের শিলার সন্ধান পাওয়া গেছে যার সময় তিনকোটি, সাড়ে তিনকোটি বছরের অধিক নয়।এ জেলার অধিকাংশ এলাকার ভূ-তাত্ত্বিক গঠন হয়েছে প্লাইস্টোসীন ও হলোসীন বা বর্তমান যুগেই।

কুমিল্লা জেলার ভৌগলিক ইতিহাসের সন্ধান পাওয়া যায় পার্গিটার রচিত পূর্ব-ভারতীয় দেশসমূহের প্রাচীনকালের মানচিত্রে।এই মানচিত্রে আজকের বাংলাদেশের এই অঞ্চলের দক্ষিণে সাগরনূপের, উত্তরে প্রাগজ্যোতিষ ও কিরাতসের অবস্থান চিহ্নিত রয়েছে। মোটামুটি ভাবে লোহিত্য নদীর অববাহিকায় প্রাগজ্যোতিষ ও পূর্বভাগের পাহাড়ের পাদদেশের অঞ্চল কিরাতস নামে অবিহিত ছিল। লোহিত্য নদীই বর্তমানের ব্রহ্মপুত্র। জেলার মধ্যভাগের সমতল- চান্দিনা প্লাবন সমভূমিই তখনকার দিনে গঠিত হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র বাহিত পলিদ্বারা। পরে অবশ্য নদীটি পশ্চিম দিকে সরে যায়। এই কিরাতসের মধ্য দিয়েই তিতাস নদীর গতিপথ চিহ্নিত। সুতরাং অনুমান করা যেতে পারে যে, প্রাগজ্যোতিষের পূর্বের অঞ্চল কিরাতসের অধিকাংশ স্থান নিয়েই আজকের কুমিল্লা জেলা গঠিত হয়েছে।

আকৃতি: 

জেলাটি মোটামুটি ভাবে ত্রিভূজাকৃতির। দক্ষিণ দিক প্রশস্ত,  উত্তর দিক সরু এবং এর মাথা পূর্ব দিকে খানিকটা ঝুকেঁ পড়েছে। মেঘনা সমভূমি হতে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। সমুদ্রতীর থেকে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশের গড় উচ্চতা প্রায় ২৫ ফুট,  আর মেঘনা সমভূমির পশ্চিম ভাগের গড় উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট। সুতরাং জেলার এই সমভূমির ঢাল মৃদু এবং পশ্চিম দিকে কুমিল্লা শহরের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত, উত্তর-দক্ষিণে প্রলম্বিত লালমাই পাহাড় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার নিম্ন জলাভূমি ব্যতীত সমগ্র সমভূমিটিকে সাধারণ ভাবে পশ্চিম-ঢাল সম্বলিত একটি সমতল ভূমি বলা যেতে পারে। ভূ-তত্ত্ব ও ভূ-গঠন শাস্ত্রে এটি ত্রিপুরা সমতল (Tippera proper) বলে অভিহিত হত। আর এ সমভূমির অধিকাংশ এলাকাই বর্ষাকালে ৫ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বর্ষায় পানির নিচে থাকলে ও এ সমভূমিতে ততটা পলি জমেনা। কারন মেঘনার পানি ততটা পলি বহন করে আনেনা। কিন্তু এ নিমজ্জিত মৃত্তিকা বেশকিছু কাল সিক্ত থাকার দরুন ভালভাবে চাষের উপযোগী হয়।

জলবায়ু,বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রাঃ 

কর্কট ক্রান্তি রেখা কুমিল্লা জেলার উপর দিয়ে অতিক্রম করার জন্য এ জেলা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অর্ন্তভূক্ত। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এখানে ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়। এ জেলায় বর্ষাকালে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয় ও এখানকার শীতকালকে মোটামুটি ভাবে শুস্ক বলা যেতে পারে। এখানে বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাত ৮০ ইঞ্চি হতে ১২০ ইঞ্চি।শীতকালে বৃ্ষ্টিপাত খুবই কম, এক রকম হয়না বললেও চলে। জেলার গড়তাপ ৭৮ ডিগ্রী ফাঃ।মে মাসে তাপমাত্রার গড় ৮৬ ডিগ্রী ফাঃ নামে। শীতকালে জানুয়ারী মাসের গড় ৬৬ ডিগ্রী ফাঃ নামে। তবে এপ্রিল-মে মাসে কখনও তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রী ফাঃ হয় আর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত কখনও তা ৪৫ ডিগ্রী থেকে ৪২ডিগ্রী ফাঃ এ নামে ।

বনজ সম্পদ

কুমিল্লা জেলার তেমন কোন উল্লেখযোগ্য বনাঞ্চল নেই। এক কালে লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ী অঞ্চলে প্রচুর বনজ সম্পদ ছিল। এখন নেই বললেও চলে। কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকা এবং চৌদ্দগ্রাম থানার কিছু অংশে কিছু কিছু বনজ সম্পদ দেখা যায়। তবে জলবায়ুর উষ্ণতা ও আর্দ্রতা,  পলি গঠিত মৃত্তিকার উর্বরতা এবং অন্যান্য কারনে এ জেলার উদ্ভিদের যথেষ্ট প্রাচুর্য দেখা যায়। গাছপালার মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, তেঁতুল, বেল, বট বা অশ্বথ্থ, খেজুর, নারিকেল, তাল, নিম, রয়না বা পিতরাজ, শিমুলতুলা, মান্দার, সুপারি, কদম্ব, কড়ই, শেওড়া, হিজল, গাব, জাম্বুরা, কুল,বন্য জামরুল, জারুল, জলপাই, আমড়া, গামার বা মেড্ডা, শাল, শিশু, ঝাউ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

———————————–x——————————–

জেলার পটভূমি

বর্তমান কুমিল্লা চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন একটি জেলা। প্রাচীনকালে এটি সমতট জনপদের অন্তর্গত ছিল এবং পরবর্তীতে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ হয়েছিল। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শনাদি থেকে যতদূর জানা যায় খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দী থেকে ত্রিপুরা গুপ্ত সম্রাটদের অধিকারভুক্ত ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে সপ্তম থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এ অঞ্চলে বৌদ্ধ দেববংশ রাজত্ব করে। নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা হরিকেলের রাজাগণের শাসনাধীনে আসে। প্রত্নপ্রমাণ হতে পাওয়া যায় যে, দশম হতে একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ বছর এ অঞ্চল চন্দ্র রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছে।

মধ্যবর্তী সময়ে মোঘলদের দ্বারা শাসিত হওয়ার পরে ১৭৬৫ সালে এটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে আসে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে কোম্পানী ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দ প্রদেশে একজন তত্ত্বাবধায়ক  নিয়োগ করে। তখন কুমিল্লা ঢাকা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে কুমিল্লাকে কালেক্টরের অধীন করা হয়। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা গঠনের মাধ্যমে ত্রিপুরা কালেক্টরেটের যাত্রা শুরু হয়। ১৭৯৩ সালে তৃতীয় রেগুলেশন অনুযায়ী ত্রিপুরা জেলার জন্য একজন দেওয়ানি জজ নিযুক্ত করা হয় এবং সে বছরই তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৮৩৭ সালে ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টরের পদগুলিকে পৃথক করা হয়। ১৮৫৯ সালে আবার এই দুটি পদকে একত্রিত করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরবর্তী সময়ে ১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ করা হয় কুমিল্লা এবং তখন থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টর পদটির নামকরণ হয় ডেপুটি কমিশনার। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লার দু’টি মহকুমা চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পৃথক জেলা হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়।

 

চেয়ারম্যান
Chairman বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু
বিস্তারিত
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
CEO জনাব শামীমা খন্দকার
(উপ-সচিব)
বিস্তারিত
নির্বাহী কর্মকর্তা
Nirbahi Officer জনাব তাসলিমুন নেছা
(সিনিয়র সহকারী সচিব)
বিস্তারিত

Facebook Like Box

আভ্যন্তরীণ ই-সেবা

গুরুত্বপূর্ণ লিংক

মোট পরিদর্শক

64982
Visit Today : 91
This Month : 2374
Total Hits : 744199

সাইটটি শেষ হাল-নাগাদ করা হয়েছে:   18-04-2024 11:05:22

  • সামাজিক যোগাযোগ
  •  
  •  
  •  

ডিজাইন & ডেভেলপড বাইঃ ফ্রিল্যান্সার আইটিঃ ০১৯৪৮২৬৩৩৫৮ / ০১৭২৯৭২৪২৩২